Mukti Juddho Wiki
Advertisement

[১]"মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।মুক্তিযোদ্ধা তথা জাতির বীর সন্তানেরা কোন পরিবার বা গোষ্ঠীর নয় তারা পুরো বাঙ্গালী জাতির  অহংকার । "

মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক সাবেক প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আব্বাছ আলী খান ১৯২৫ সালে নেত্রকোণা জেলার চকপাড়াস্থ পৈত্রিক বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-মনির উদ্দিন খান। তিনি নেত্রকোণা পৌরসভার চেয়ারম্যানগণের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম বয়সে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি সেবা ও কর্মশক্তি দিয়ে পৌরসভার উন্নয়নে সর্বাত্মক চেষ্টা ও জনসাধারণের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন।  বর্তমানে নেত্রকোণা পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খান তাঁরই সুযোগ্য সন্তান।

রাজনৈতিক ও কর্ম জীবন: তিনি ১৯৫৭-১৯৬১ ও ১৯৭৭-১৯৮২ সময়কাল দুই দুইবার নেত্রকোণা পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন। রাজনৈতিক অঙ্গণে তাঁর অবদান বিশেষভাবে স্মরণীয়। জনাব আব্বাছ আলী খান ১৯৭০ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি সারাজীবন আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন।‘৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে একজন সংগঠক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৩ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেত্রকোণা আসেন। সেই দিন বঙ্গবন্ধুর সভা করার কথা ছিল নেত্রকোণা শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে। সভা শুরুর প্রাক্কালে ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের নেতাকর্মীরা গুন্ডা লেলিয়ে দিয়ে সভা ভন্ডল করে দেয়। নেত্রকোনা ও ময়মনসিংহের মুসলিম লীগের ভাড়াটিয়া গুন্ডারা নেতৃবৃন্দের উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করলে চকপাড়া এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি আব্বাছ আলী খান ও সেকানদার খানের মধ্যস্থতায় সভার স্থান পরিবর্তন করে গরুহাট্টা-বারহাট্টা রোডে মতান্তরে নিউটাউন পুকুরপাড়ে নিয়ে আসেন এবং সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভাশেষে নেতৃবৃন্দকে আব্বাছ আলী খান তাঁর বাড়িতে আপ্যায়নের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেদিন শেখ মুজিব একটি ঐতিহাসিক শর্তে দাওয়াত কবুল করেন। শর্তটি ছিল, আব্বাছ আলী খানকে অবশ্যই আওয়ামী লীগ করতে হবে। সেই সূত্রে আব্বাছ আলী খান, গাজী গোলাম মোস্তাফা-সহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

মুক্তিযুদ্ধে অবদান: মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব আব্বাছ আলী খান ‘৭১ সালে রংড়া ক্যাম্পের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে  অংশগ্রহণ এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দেন। তিনি বাংলাদেশ সংবিধানে স্বাক্ষরকারী একজন ঐহিতহাসিক মানুষ। আজীবন বিভিন্ন সমাজ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থেকে অসাম্প্রদায়িক ভাবে কাজ করেন। তিনি বহু স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার সাথে জড়িত ছিলেন। এ মহান মানুষটি ১৯৮৫ সালের ৫ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

সাংস্কৃতিক সংগঠন: রাজনীতির পাশাপাশি তিনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের  সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৬৩ সনের জানুয়ারি মাসে মধুমাছি কচিকাঁচার মেলার উপদেষ্টা মন্ডলীর সম্মানীত সদস্য ছিলেন । মধুমাছি কচিকাঁচার মেলার প্রধান উদ্যেক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা সংগঠক বীরমুক্তিযোদ্ধা শহীদ মেহের আলী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত  মেলার পরিচালক হিসেবে ছিলেন জনাব এডভোকেট একে ফজলুল কাদের, আর উপদেষ্টা মন্ডলীতে ছিলেন- সর্বজনাব এন আই খান,জনাব আব্দুল খালেক, জনাব খালেকদাদ চৌধুরী, এডভোকেট ফজলুর রহমান খান, ডা. জগদীশ চন্দ্র দত্ত ,মাওলানা ফজলুর রহমান খান,হাবিবুর রহমান খান  প্রমুখ। জনাব মেহের আলী শামসুজ্জোহাকে আহ্ববায়ক ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আয়েশা খানমকে আহ্ববায়িকা করে কমিটি গঠন করে দেন। নেত্রকোণা মধুমাচি কচিঁ কাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠায় তিনি যুক্ত থেকে শিশুদের মাঝে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের বিকাশ ঘটিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করেন।

পুরষ্কার ও সম্মানণা: ষাটের দশকে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য “Bangladesh Muktijudho Research Institute [][][][]Silver Award-2023” সম্মাননা প্রদানের জন্যে মনোনীত করা হয়।

তথ্যসূত্রঃ[]

  1. বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আক্কাস আহমেদ(সভাপতি-নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজ),“শহীদ বুদ্ধিজীবী সম্মাননা- ২০২২”, Rajdhani TV, 04/10/2023
  2. কবি তানভীর জাহান চৌধুরী(সা:সম্পাদক-নেত্রকোণা সাহিত্য সমাজ),,,“শহীদ বুদ্ধিজীবী সম্মাননা- ২০২২”, Rajdhani TV, 04/10/2023
  3. চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান(সহ-সভাপতি, নেত্রকোণা ক্লাব),“মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায় অতন্দ্র,প্রহরীঃ বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা ইনস্টিটিউট, অস্ট্রেলিয়া”, নেত্রকোণা জার্নাল,২৪/১০/২০২৩
  4. অধ্যাপক অলিউল্লাহ,“নেত্রকোণায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের(মরণোত্তর) সম্মাননা -- ২০২২ প্রদান”,দৈনিক  বাংলার অধিকার ১/১০/২০২৩
Advertisement